উওরবঙ্গের ভারত ছাড়ো আন্দোলন সম্পর্কে আলোচনা || Quit India Movement In North Bengal


quit-india-movement-in-north-bengal


Introduction ; ১৯৪২ খ্রিস্টাবদের ৮ই আগস্ট জাতীয় কংগ্রেসের নেতৃত্বে সাড়া দিয়ে ভারতের স্বাধীনতা কামী জনগণ যে ভারত ছাড়ো আন্দোলন শুরু করেছিলো, তাতে উওরবঙ্গের মানুষও ব্যাপকভাবে যোগাযোগ করে। উওরবঙ্গের জলপাইগুড়ি মালদহ এবং বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য তৎকালীন সময়ের দিনাজপুর জেলার সাধারণ মানুষ, স্থানীয় নেতাদের নেতৃত্বে ভারতছাড়ো আন্দোলনে অংশগ্রহণ করে। এবং ব্রিটিশদের বিতাড়িত করতে তারা যেভাবে পেড়েছিলো সেভাবেই চেষ্টা করেছিলো।

◆ জলপাইগুড়িতে ভারতছাড়ো আন্দোলনের প্রভাব ; 

জলপাইগুড়িতে এই আন্দোলনের সমর্থনে পৌরকমিশনারগণ পদত্যাগ করলেন। ছাত্রেরা স্কুল-কলেজ ছেড়ে মিছিলে অংশ নিল। ৮ই আগষ্ট জলপাইগুড়ির ইতিহাসের বোধহয় সর্ববৃহৎ মিছিল তারাপদ ব্যানার্জি ও উমা দাশগুপ্তের নেতৃত্বে শহরময় ঘুরে বেড়ায় এবং সরকারী কাজকর্ম স্তব্ধ করে দেয়।

◆ মালদা জেলায় ভারতছাড়ো আন্দোলনের প্রতিক্রিয়া ; 

মালদা জেলায় এই আন্দোলনের প্রধান নেতৃত্বে ছিলেন—পিল্লা নিবাসী, সুবোধকুমার মিশ্র। তাদেঁর নেতৃত্বে বিভিন্ন স্থানে জনতা রেল লাইন তুলে

ফেলে, টেলিগ্রামের তার ও খুঁটি উপড়ে ফেলে, পোষ্ট অফিস ও রেলস্টেশনে আগুন লাগায় ১৯৪২ সালের ৪ঠা আগষ্ট সরকার সুবোধকুমার মিশ্রকে বন্দী করে হাজতে নিয়ে আসে ; কিন্তু এক বিপুল জনতার বিক্ষুব্ধ জোয়ার তাঁকে বৃটিশের হাজত থেকে ছিনিয়ে নিয়ে চলে যায়।

NBU, MDC-History of North Bengal এর সম্পূর্ণ সিলেবাসের সব প্রশ্ন উওরের পিডিএফ নোট, স্বল্পমূল্যে পেতে চাইলে আজই '8388986727'-এই নম্বরে যোগাযোগ করো। 

◆ দিনাজপুরে ভারতছাড়ো আন্দোলন ; 

দিনাজপুরে এই আন্দোলন সম্পূর্ণ গণ-বিদ্রোহের রূপ নেয়। ১৩ই সেপ্টেম্বর রাতে কমপক্ষে ৮০০০ লোকের এক বিরাট গণ-বাহিনী গোপনে ডাঙ্গিঘাটে সমবেত হয় এবং সরোজ চ্যাটার্জির নেতৃত্বে পরদিন সকালে বালুরঘাট শহরকে ঘিরে ফেলে। অবরুদ্ধ শহরের মধ্যে তখন শুরু হয় ধ্বংসযজ্ঞ। সাবরেজিষ্টি অফিস অগ্নি সংযোগে সম্পূর্ণ ভস্মীভূত হয়। দেওয়ানী আদালত ও সমবায় ব্যাঙ্ক-ভবন ভস্মীভূত হয়। টেলিগ্রাফের তার ও যন্ত্রপাতি ছিড়ে ফেলে দেওয়া হয়। সারাদিন ধরে জনতা সম্পূর্ণ শহরটিকে তছনছ করে ফেলে। পোষ্ট অফিস, রেল স্টেশন, কৃষি অফিস, গোডাউন, এমন কি ইউনিয়ন বোর্ডের অফিস পর্যন্ত আক্রান্ত ও বিধ্বস্ত হয়। গাঁজা ও মদের দোকান চুরমার করা হয়। শহর সারাদিন আন্দোলনকারীদের দখলে রইল। পরদিন সকালে বিরাট পুলিশবাহিনী নিয়ে শহরে প্রবেশ করেন এবং বিক্ষোভকারীদের কবল থেকে শহর উদ্ধার করে। জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট তপন থানাতে বিক্ষুদ্ধ জনতার উপর গুলি চালান। এই সব জনতা তেলিঘাটা থেকে চাল রফতানি বন্ধ করে দিয়েছিল। সারা মহকুমায় হাজার হাজার লোককে কয়েদ করা হলো। সর্বত্র সভা ও মিছিল বের করা নিষিদ্ধ হয়ে গেল। সরোজবাবুর মাথার দাম এক হাজার টাকা ঘোষণা করা হলো। তাছাড়া বালুরঘাট শহরেই শুধু ৫০০০ টাকা পিটুনিকর ধার্য করা হলো।

আরও জানতে ক্লিক করো👉 ; রাজা গণেশের ইতিহাস জানা আছে কি?

আরও পড়ো 👉 ; তেভাগা আন্দোলনের কারণ, দাবী, স্লোগান এবং ফলাফল সম্পর্কে আলোচনা। 

আরও পড়ে দেখো👉; জানো কী মাৎস্যন্যায় বলতে কী বোঝায়? না জানলে আজকেই জেনে নাও